*** নতুন ভালোবাসার গল্প,Bangla Valobasar golpo, Love Story,Bangla love Story,***

*** পড়বেন আশা করি ভালো লাগবে ***

 

-হ্যালো।

-তুমি এতক্ষণ কার সাথে কথা বলছিলে?

-আম্মু ফোন করেছিল।আম্মুর সাথেই কথা

বলছিলাম।

-ওহ,তোমায় না বললাম ক্লাস শেষ হলেই আমাকে

কল

করার জন্য।

-সরি,এইতো বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি তাই ভুলে

গেছি।

এভাবে কথা বলতে থাকে ঈশা। পাশে বসে থাকা

বান্ধবীরা অবাক হয়ে তার কথা শুনে।তার কথা বলা

শেষ

হলে রিমি বলে ওঠে, "আচ্ছা তুই কি 

সিরিয়াস হবি না?"

-কোন বিষয়ে?

-এইযে এত ছেলের সাথে সম্পর্ক করিস,

কোনটাই তো

৭দিনের বেশি ঠিকিয়ে রাখিস না। এভাবে

ছেলেদের

ছ্যাঁকা দেয়া কি তোর ঠিক হচ্ছে?

-বাহ,ছেলেদের জন্য তোর খুব মায়া দেখছি।

পাশ থেকে আরেকজন বলে,"রিমি তো ঠিকই

বলেছে।

তোর এরকম করাটা ঠিক হচ্ছে না।

-দেখ আমি কোনো ভুল করছি না। এসব

ছেলেদের আমি

ভালো করেই জানি। ওরা যদি আমার থেকে ভালো

কাউকে পায়,তাহলে আমাকে ছেড়ে যেতে এক

সেকেন্ড

ভাববে না। তাই আমাকে ফেলে যাওয়ার আগে

আমিই

তাদের ফেলে দেই। বুঝলি এইবার?

-কিন্তু এদের মধ্যে হয়তো কেউ না কেউ

সত্যিই তকে

ভালবাসে।

-আমাকে যদি কেউ সত্যিই ভালবেসে থাকে তবে

আমি

সেটা বুঝতে পারবো।

একথা শুনে ওর বান্ধবীরা আর কিছুই বলে না।

!

ওরা যেখানে বসে গল্প করছিল তার কিছু দূরে

চারটে

ছেলে গল্প করছে।ওরা সবাই অনার্স ৩য় বর্ষের

ছাত্র।তখন

তাদের একজন ইশান কে দেখিয়ে বলে,"জানিস

ইশান!

ঐযে মেয়েটা ওর কাছে প্রেম হল একটা মজার

খেলা।"

-কিরকম?

-ও কারো সাথে ৭দিনের বেশি রিলেশন রাখে না।

অনেক

ছেলেই চেষ্টা করেছে কিন্তু কেউ পারেনি।

-ওহহহ, তো একথা আমায় কেন শুনাচ্ছিস?

-তুই আমাদের ফাস্ট বয়। আর আমাদের থেকে

দেখতেও

ভালো। তাই আমরা চাই তুই ঈশার সাথে প্রেম কর।

-মেয়েটির নাম ঈশা নাকি?

-হাঁ,তোর নামের সাথে মিল রয়েছে।

-হউক মিল,তবু আমি প্রেম করতে পারবো না।

রাতুল বলে," আরে ওকে কি বলছিস? ঈশা তো

অন্যদের

সাথে ৭দিন প্রেম করে কিন্তু ওর সাথে প্রেমই

করবে না।"

-ওর সাথে প্রেম করা কোনো ব্যাপার হল।

-প্রেম তো অনেকেই করেছে। ৭দিনের

বেশি করতে

পারবি

কি-না এটা বল।

-৭দিন কেন,ওর সাথে আমি ১মাস প্রেম করে

দেখাবো।

তার কথায় রাতুল বলে,"পারবি না।"

-যদি পারি বল কি করবি?

-আমি তোদের সবাইকে নিয়ে কক্সবাজার ঘুরতে

যাবো।

সম্পূর্ণ আমার খরছে।

রাতুলের কথায় বাকী ২জন আনন্দধ্বনি করে উঠে।

রাতুল

শিল্পপতি বাপের একমাত্র ছেলে। তাই এমন বাজি তার

দ্বারাই সুভা পায়। সেও ঈশার সাথে প্রেম করেছিল।

কিন্তু ঠিকিয়ে রাখতে পারেনি। তাই সে নিশ্চিত ইশানও

পারবেনা।

ইশান বলল,"ঠিক আছে আমি রাজি।"

!

পরের দিনই ইশান পরিচিত হয় ঈশার সাথে।যেহেতু

ঈশা

সম্পর্কের ব্যাপারে সিরিয়াস না তাই তিন দিনের মধ্যে

তাদের প্রেম হয়ে যায়। শুরু হয় তাদের প্রেমের

রচনা।

আরর ইশানের বন্ধুদের দিন গণনা।

ওরা দুইজন সবসময় ফোনে কথা বলতো,এমনকি

ভার্সিটি

তে এলেও দুইজন কে একসাথে দেখা

যেতো। ঈশার কাছে

ইশান কে অন্য রকম লাগে।আগে যত ছেলের

সাথে সম্পর্ক

করেছে সবাই থেকে সম্পূর্ণ আলাদা মনে হয়।তাই

তার

সাথে বাইরেও ঘুরতে যায়।ইশানের কথাবার্তা, আচার-

আচরণ সবই ঈশার কাছে ভালো লাগে তাই ৭দিনের

পরেও

সে সম্পর্ক চালিয়ে যায়। উদ্দেশ্য ইশান কে

আরেকটু

ভালো করে জেনে নেয়া।

এদিকে রাতুল টেনশনে পড়ে যায়।

কক্সবাজার যাওয়ার টাকার জন্য না।টাকা তার কাছে

কিছুই না।আসল কারণ হল সে ইশানের কাছে হেরে

যাবে।

!

এইভাবে দিন যেতে থাকে। ঈশা বুঝতে পারে ইশান

তাকে সত্যিই ভালবাসে আর সেও ইশানের প্রতি

দুর্বল

হয়ে যায়। তাই সে ইশান কে জীবন সঙ্গী

হিসেবে পেতে

চায়।

কাল তাদের সম্পর্কের ১মাস পূরণ হবে।ইশান

ফোন করে

পার্কে দেখা করতে বলে।

কালকে ইশান ফোন করে দেখা করতে

বলেছে।তাই ঈশা

আজ খুব সুন্দর করে সেজেছে। এই এক মাসে

সে ইশান কে

অনেক ভালবেসে ফেলেছে।

পার্কে গিয়ে ইশান কে বসে থাকতে দেখে। দূর

থেকে

ঈশা কে দেখে ইশান আর চোখ ফেরাতে

পারেনা। সে

বুঝতে পারলো না ঈশা আজকে শাড়ী পড়ে

এসেছে কেন?

এর আগে তো কোনো দিন তাকে শাড়ী

পড়তে দেখেনি।

ফর্সা মানুষকে কালো ড্রেসে এমনিতে খুব

সুন্দর লাগে।

ঈশার পড়নে ছিল কালো শাড়ী তারমধ্যে সাদা

ছোট ছোট

পাথর। বিকেলবেলার পড়তি আলোতে পাথর

গুলো চকচক

করছিল।

কাছে এসেই ঈশা একটা হাসি দিয়ে বলে,"সরি একটু

দেরি

হয়ে গেলো। কতক্ষণ হল এসেছো?"

ইশান কিছু বলতে পারে না।সে তখনো ঈশার রূপে

ডুবে

ছিল। সে ভাবে এই মেয়ের হাসি দেখলে

যেকেউ ওর

প্রেমে পড়ে যাবে।

-কি হল,কিছু বলছো না যে?

-তোমাকে একটা কথা জানানোর জন্য এখানে

ডেকেছি।

বুঝতে পারছি না কিভাবে কথাটা তোমায় বলবো।

-আমাকে বলতে এত দ্বিধা করছো কেন? কি

বলবে বলো।

-দেখো ঈশা, আমাদের সম্পর্কের প্রথম দিকে

তুমি সময়

কাটানোর জন্যই প্রেম করছিলে। যেমনটা

অন্যদের

ক্ষেত্রে করেছো। কিন্তু.....

তাকে বলতে না দিয়ে ঈশা বলে,"আমি মানছি

তোমার

সাথেও আমি প্রথমে সিরিয়াস ছিলাম না।কিন্তু এখন

সত্যিই আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি। তুমি বিশ্বাস

করো।

-তুমি আমার সাথে অভিনয় করতে করতে আমায়

ভালবেসে

ফেলেছো,কিন্তু আমি আজও তোমায় ভালবাসতে

পারিনি।

একথা শুনার পর ঈশার মাথা চক্কর দিয়ে উঠে,সে

নিজের

কান কে বিশ্বাস করতে পারেনা।সত্যিই কি সে একথা

শুনেছে?

ইশান বলে যায়,"যে আমাকে ভালবাসে তার সাথে

কিভাবে প্রতারণা করি,তাই আমাদের সম্পর্ক এখানেই

সমাপ্তি দিতে চাই।"

ঈশা হঠাত করে কেঁদে দেয়।

-তুমি কেন এমন করছো ইশান?আমি জানি তুমিও আমায়

ভালবাসো,কিন্তু কেন.....

-তুমি ভুল জানো,আমি তোমাকে ভালবাসি না।বন্ধুদের

সাথে প্রেমের বাজি ধরেছিলাম।আজ আমি জয় লাভ

করেছি।

একথা বলে ইশান এক অদ্ভুত হাসি দেয়,যে হাসির

অর্থ

ঈশা বুঝতে পারেনা। ঈশা ওর হাত ধরে বলে,"তুমি

কেন

মিথ্যে বলছো?আচ্ছা তুমি আমার চোখে চোখ

রেখে

বলতো, আমায় ভালবাসো না?"

ইশান কেন যেন ওর চোখের দিকে তাকাতে

পারে না।ওর

হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে ওঠে দাঁড়ায়।

-তোমার বিশ্বাস না হলে আমার বন্ধুদের জিজ্ঞেস

করে

দেখো।

একথা বলে ইশান আর দাঁড়ায় না। হাঁটা শুরু করে। পিছন

থেকে ঈশা ব্যাকুল কন্ঠে ডাকে আর চোখের

পানি

ফেলে। কিন্তু ইশান ফিরেও তাকায় না।

!

সেদিন বাড়ি ফিরে ঈশা অনেক কাঁদে। সে চিন্তাও

করতে পারেনি ইশান তাকে এভাবে কষ্ট দেবে।

তিনদিন

সে বাসা থেকেই বের হয়না।তিনদিন পর সে

ভার্সিটিতে

যায়। গিয়ে জানতে পারে ইশানের কথা মিথ্যে নয়।

তাকে নিয়ে প্রেমের বাজি ধরেছিল ইশান। তবুও

সে

ইশান কে ভুলতে পারে না।সে বিশ্বাস করে ইশান

তার ভুল

বুঝতে পারবে। তার কাছে এসে তার হাত ধরে

বলবে,"আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি ঈশা।"

কিন্তু ঈশার ভাবনা ভুল প্রমাণিত করে ইশান তার

বন্ধুদের

নিয়ে কক্সবাজার ঘুরতে চলে যায়। যেদিন ঈশা

জানতে

পারে ইশান সত্যিই কক্সবাজার চলে গেছে সেদিন

তার

ইশানকে খুব ঘৃণা করতে ইচ্ছে হয়।

৭দিন কক্সবাজার কাটিয়ে ইশানের বন্ধুরা চলে

আসলেও

ইশান কক্সবাজার থেকে যায়।

কয়েকদিন পরের কথা।

একদিন হঠাত ঈশার বান্ধবী রিমি তাদের বাসায় হাজির।

তাকে দেখেই ঈশা বুঝতে পারে কিছু একটা

হয়েছে।

-রিমি তোকে এমন দেখাচ্ছে কেন?

-ইশান ভাই কক্সবাজার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন?

উনার পরিবারের সবাই আর বন্ধুরা কক্সবাজার চলে

গেছেন।

এই কয়দিনে ইশানের প্রতি তার ঘৃণা অনেক বেড়ে

গেছে।

ওর কথা আমার কাছে

কেন

বলছিস?"

-কারণ তুই তাকে ভালবাসিস আর সেও তোকেই

ভালবাসে।

-মিথ্যে, ও আমাকে ভালবাসে না। বাজিতে জিতার

জন্য

আমার সাথে প্রেম করেছে।

-না ঈশা, আমরা ভুল জানি। ইশান ভাই সত্যিই তোকে খুব

ভালবাসে। তাই তোকে দূরে সরানোর জন্য এমন

করেছেন।

কারণ তার ব্রেইন টিউমার হয়েছে। রিমির কথা শুনে

ঈশা

তার চোখের পানি আটকে রাখতে পারেনা। সময়

নষ্ট না

করে ঈশা তখনি কক্সবাজার এর উদ্দেশ্যে রওনা

দেয়।

কিন্তু ঈশার যেতে একটু দেরি হয়ে যায়। কিছুক্ষণ

আগেই

ইশান এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেছে।

ঈশা

দেখতে পায় সবাই কান্নাকাটি করছে।

ইশানের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে ঈশাও

কয়েক

মুহূর্তের জন্য নিরব হয়ে যায়। তারপর হঠাত কেঁদে

ফেলে।

ইশানের বন্ধু এসে তার হাতে একটা কাগজের টুকরা

দেয়।

ঈশা সেখানে থাকা লেখাগুলো পড়তে শুরু করে...

***

ঈশা

জানিনা এখন তুমি আমায় কতটা ঘৃণা করো।আমার প্রতি

তোমার ঘৃণার জন্য হয়তো আমার চিঠি না পড়েই

ছিঁড়ে

ফেলবে।আর যদি পড়ো তখন আমি তোমার কাছ

থেকে

অনেক দূরে থাকবো। আমি তোমাকে একটি কথাই

জানাতে চাই। আমি তোমায় অনেক ভালবাসি। তোমার

সাথে কোনোদিন ও অভিনয় করিনি। বন্ধুদের

সাথে বাজি

ধরে তোমার সাথে প্রেম করতে চেয়েছিলাম

ঠিক কিন্তু

তোমার সাথে যেদিন প্রথম পরিচিত হই,সেদিন

তোমায়

দেখে ভালোলাগা শুরু হয়।তারপর তোমার সাথে

মিশতে

গিয়ে ভালবেসে ফেলি। তবে যেদিন জানতে

পারলাম।

আমার ব্রেইন টিউমার হয়েছে, আমি আর মাত্র

কয়েক দিন

বাঁচবো সেদিনই আমি সিদ্ধান্ত নেই তোমার

জীবন

থেকে নিজেকে অনেক দূরে সরিয়ে নিবো।

আর তাই

বন্ধুদের সাথে ধরা প্রেমের বাজিকেই কাজে

লাগালাম।

সেদিন যখন তুমি কেঁদে কেঁদে ব্যাকুল ভাবে

আমায়

ডাকছিলে, ইচ্ছে করছিল তোমাকে জড়িয়ে ধরে

বলি

আমি যা কিছু বলছি মিথ্যে বলছি।

কিন্তু আমি সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারিনি। কেন

জানো? কারণ তখন আমার দুচোখ বেয়ে অঝর

ধারায় জল

পড়ছিল।তাই ফিরেও তাকাতে পারিনি।

আজ আমি প্রেমের বাজিতে জিতেও পরাজিত।

পরিশেষে একটি কথাই বলার, পারলে আমায় ক্ষমা

করে

দিও।

সুখে থেকো প্রিয়।

!

চিঠি পড়ে শেষ হতেই ঈশা ঈশানের লাশের কাছে

গিয়ে

জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে!!!!!


আমার বিশ্বাস আপনার সুন্দর মনটা আমি ছুতে পেরেছি!

বন্ধু হতে চাই আপনার!

আচ্ছা আপনার কোন কষ্টের কথা আপনি আমার সাথে 

শেয়ার করতে পারেন!

Post a Comment

Previous Post Next Post