প্রত্যেক ছেলেই চায় তার বউটা রাজকুমারী বা পরীর মত সুন্দরী হয়।সেই চাওয়াটা আরো বেশি বৃদ্ধি পায় যখন ছেলে নিজে কালো হয়।
তাহলে মেয়েরা কেন ব্যতিক্রম হবে, তারাও এমনটাই চাইবে।
কিন্তু সবার ভাগ্যে সব জোটে না। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে সব কিছুই শেষ হয়ে যায়।
এমন একটা ঘটনা ঘটল গতকাল। যা কখনো কেউ স্বপ্নেও ভাবেনি।
শুরুর থেকেই সবটা বলি......
যদিও গল্প তবুও সত্যিই ঘটেছে একটা ছেলে আর একটা মেয়ের জীবনে।
মেয়েটা সত্যিই অনেক সুন্দরী, কেশবতী ছিল।পড়ালেখায়ও সেরা ছিল।সব দিক দিয়ে পারফেক্ট ছিল।
তার বাবা প্রচুর গরিব ছিল।
কিন্তু মেয়েটা ভাবত জগতের সবচেয়ে মূল্যবান আর বিলাসে বসবাসের জন্য তার জন্ম হয়েছে।অহংকারীও বটে।
সবসময় নিজেকে রাজকন্য ভাবত। আর স্বপ্ন দেখত তার রৃপের জন্যই তার বড় কোন ঘরে কোন রাজকুমারের সাথেই বিয়ে হবে।
কিন্তু বাস্তব সত্যিই অনেক কঠিন। রাজত্ব পাওয়া গেলেও রাজকুমারের দেখা পাওয়া বড়ই দুর্লভ।
আর রাজকুমার পাওয়া গেলেও রাজত্ব পাওয়া যায়না।
মেয়েটি রাজকুমার খুঁজে পায় কিন্তু রাজত্ব পায় না।
মানে বয়ফ্রেন্ড।তার বয়ফ্রেন্ড তার মতই গরিব।
তবু মন কি আর ওত কথা শুনে। রিলেশনে জড়িয়ে গেল।আর কয়েক বছর পর সেই ব্যাপারটা তার বাড়ির লোক জেনে গেল।
এই খবরটা মিডেলক্লাস ফ্যামিলির জন্য কতটা খারাপ সেটা শুধু তারাই বুঝে।তাই ঠিক করল মেয়েটির বিয়ে দিবে।
ভাগ্যক্রমে এটা বড় ঘরওয়ালা ছেলে পাওয়া গেল।
মেয়েটি যতটা সুন্দর ততটাই লোভী ছিল।সেও মেনে নিল। কিন্তু ছেলে তো ইনোসেন্ট, এত প্যাচ বুঝে না।যদিও সে কুৎসিত কিন্তু মনটা অনেক পরিষ্কার।
আর সুন্দরী বউ প্রত্যেক ছেলের স্বপ্ন থাকে।
পরিবারের চাপে পড়ে মেয়েটা বিয়ে করতে রাজি হল। এতে তার পরিবার কিছুটা নিশ্চিন্ত হল।কিন্তু এতে কি সকল সমস্যা সমাধান হয়।বিয়ের পরও মেয়েটা তার বয়ফ্রেন্ডডের সাথে সম্পর্ক রাখে। ছেলের পরিবারে ব্যাপারটা জানাজানি হয়।
তখন তাকে অনেক কথা শুনতে হয়। ছেলের পরিবার সত্যিই অনেক ভাল তাই প্রথম প্রথম তাকে বুঝাত কিন্তু তাতেও কিছু না হওয়াতে তাকে বাপের বাড়ি দিয়ে আসার সিদ্বান্ত নেয়।
কিন্তু ছেলেটা তার বউকে এতটাই ভালবাসে যে তাকে দিয়ে আসা তো দুর তার কাছ থেকে দূরে থাকতেও পারে না। তাই সবার বিরুদ্ধে গিয়ে তারা আলাদা হয়ে যায়।
আলাদা হওয়ার পর আরো সমস্যা বাঁধে।সমস্যা সমূলে বিচ্ছেদ না করলে আবার দেখা দিতে পারে।মেয়েটি তখনো তার পুরানো বয়ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলত। আলাদা হওয়ার পর মেয়েটি তার স্বামীকে ফাঁকি দিয়ে তারা রোজ দেখাও করে।
আর ছেলেটি কাজ সেরে এসে ঘরের সব কাজ করে সাথে রান্নাও।
এভাবে ২বছর চলে যায়।
মেয়েটির একটা চাকুরি হয়।এখন তো কাজের বাহনা দেখিয়ে সে তার বয়ফেন্ডের সাথে ঘুরতে যায়।
এমনি এক বিকালে তারা ঘুরাঘুরি খাওয়া দাওয়া শেষ করে বাড়ি ফিরছিল।
গাড়িতে উঠার জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল।
হঠাৎ পিছন থেকে বড় কার্গো গাড়ি এসে মেরে দেয়।মেয়েটি ছিটকে পড়ে।ভাগ্যের জোড়ে তার বয়ফ্রেন্ড বেঁচে যায়।
সবাই ধরাধরি করে মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
আর এক্সিডেন্ট স্পট থেকেই ছেলেটি পালিয়ে যায়।
মেয়েটির স্বামী তার জন্য যা যা করার সব করে।
ডাক্তার বলে জোড়ে ধাক্কা লাগাতে আর রক্ত ক্ষরণের জন্য মেয়েটির মুখের একপাশ নষ্ট হয়ে গেছে।কয়েকটা হাড় ভেঙে গেছে। সার্জারি করলেও আগের চেহারা ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়।
যেই চেহারার জন্য মেয়েটির এত অহংকার,তার স্বামীকে এত তিরস্কার করত।তাদের সম্পর্ক নিয়ে ছেলে খেলা করত।সেই চেহারাই তার ধ্বংসের কারণ হল।
কিন্তু ছেলেটি তাকে আজও আগের মতই ভালবাসে। সবাই যতই বলুক
এই বিয়ে সে কিছুতেই ভাঙবেনা।বিয়ে, আর এই সম্পর্কের মূল্য তার কাছে অনেক।
আজকে এতদিন হল মেয়েটির প্রেমিক কাছে আসা তো দুরে থাক তার খবর পর্যন্ত নিল না।
২৪ ঘন্টা না খেয়ে কাছে আসে শুধু তার স্বামী।তার খেয়াল রাখা থেকে চলার শক্তি আজ সেই কুৎসিত ছেলেটি।
মেয়েটি হয়ত আজ বুঝতে পেরেছ কে তার খুব কাছের আর কে দুরের। ভালবাসা দিয়ে সব জয় করা যায়। সত্যিকারের ভালবাসা চেহারা দেখে নয় মন দেখে করা হয়।
কে জানে মেয়েটি কখনো ছেলেটাকে ভালবাসতে পারবে কি না।নাকি সুস্থ হলে আবার তিরস্কার করে তাকে দূরে ঠেলে দেবে।
তবু আমরা তার সুস্থতা কামনা করি।তাদের মধ্যে মনের মিল হওয়ার, সকল দূরত্ব ঘুচে যাওয়া প্রতিক্ষায় থাকি।
Post a Comment