চোঁখ খুলতেই সবকিছু ঝাপসা দেখতে লাগলো রিমি।
মাথায় ব্যাথাটা একটু বেশী জোড়েই লেগেছে মনে হয়।
তাই হয়তো চোঁখে সবকিছু ঝাপসা দেখছে।
সময়ের সাথে সাথে রিমির মস্তিষ্কের নিউরন
গুলা সঠিক ভাবে কাজ করতে শুরু করলো।
যার ফলে রিমি তার দৃষ্টিশক্তি এবং
স্মৃতিশক্তি সম্পূর্ণ রুপে
ফিরে পেলো। দৃষ্টিশক্তি এবং স্মৃতিশক্তি
ফিরে পাওয়া মাত্রই রিমির
প্রতিটি ধমনী শিরা ভয়ে ভয়ে কম্পিত হতে লাগলো।
চিন্তায় কপালের ঘাম গাল বেড়ে পরতে শুরু করলো।
রিমির ভয়টা আরো বেড়ে গেলো যখন সে দেখতে পেলো
তাকে একটা চেয়ারের সাথে হাত-
পা এবং মুখ বেঁধে রাখা হয়েছে।
ভালো করে চারপাশটা লক্ষ্য করতেই ভয়ে বুকটা
আতংকিত হয়ে উঠলো।
কারণ এই জায়গাটা যে তার অনেক পরিচিত।
এই জায়গায় এই পরিস্থিতিতে নিজেকে এই ভাবে
দেখবে তা কখনোই কল্পনা করতে পারেনি রিমি।
রিমি ভালো করেই বুঝতে পারছে তার সাথে
খুব খারাপ কিছু হতে যাচ্ছে।
তাই যত দ্রুত সম্ভব নিজেকে ছাড়ানোর
চেষ্টা করছে কিন্তু কোনো
কিছুতেই সে সফল হতে পারছে না।
.
দরজা খোলার শব্দেই নিজেকে
দরজা খোলার শব্দেই নিজেকে
শান্ত করে ফেললো রিমি।
দরজা খুলে যখন দিহান রুমের ভিতরে
আসলো তখন আর
রিমির বুঝতে বাকী রইলো না যে
এইসব দিহানেরই কাজ।
রিমির মাথায় যে দিহানই আঘাত করেছে
এতে আর কোনো সন্দেহ নেই তার।
দিহানকে দেখে রিমি অনেকটাই শকড্ খেলো।
শেষ পর্যন্ত তার সবচেয়ে কাছের মানুষটাই তার সাথে
এসব করলো তা যেন ভাবতেই পারছে না রিমি।
দিহানের ডেভিল স্মাইল রিমির
মনে ভয় আরো ধরিয়ে দিচ্ছে।
রিমির সামনে এ যেন এক অন্য দিহান।
যাকে সে কখনোই দেখেনি।
কিন্তু তার দিহান তো এমন ছিলো না তাহলে আজ
কেনোই বা তার সাথে এমন করছে?
কেনোই বা তাকে এইভাবে বেঁধে রেখেছে?
রিমি তার চোঁখের মায়া দিয়ে দিহানের মন
নরম করার চেষ্টা করলো
কিন্তু রিমি আজকে এতেও ব্যর্থ।
আশ্চার্যের ব্যাপার হলো যে দিহান
রিমির চোঁখের দিকে তাকালেই সব ভুলে যেতো
সে কিনা রিমির এতক্ষণ তাকিয়ে থাকা
দেখেও মন গলিয়ে ফেললো না।
আজকে রিমি ভালোবাসার যে অস্ত্রই দিহানকে
প্রয়োগ করছে তাতেই সে ব্যর্থ হচ্ছে।
রিমি মনে মনে ভাবতে শুরুই করে দিয়েছে
সে হয়তো আর বেশীক্ষণ বাঁচবে না।
.
দিহান তার কাঁধের ব্যাগ থেকে কিছু ইলেক্ট্রিক
.
দিহান তার কাঁধের ব্যাগ থেকে কিছু ইলেক্ট্রিক
তার বের করে রিমির চেয়ারের
সাথে তা লাগাতে লাগলো।
দিহানের তার লাগানো দেখেই থর থর
করে কাঁপতে শুরু করলো রিমি।
তারপর এক এক করে সব কিছু
সেট করে ফেললো দিহান।
একটু টেষ্ট করার জন্য সুইচ অন করার সাথে সাথেই
ইলেক্ট্রিক ভোল্টের বিশাল শকডে্র
কারণে প্রচন্ড জোড়ে
নড়ে উঠলো রিমি। দিহান সুইচ অফ করার
সাথে সাথেই ছটফট করতে লাগলো রিমি।
ততক্ষণে ভয়ে এবং চিন্তায় তার
পুরা শরীর ভিজে একাকার।
রিমি দিহানের এমন আচারণ দেখে বুঝতে পারলো
সে দিহানের ভয়ংকর ক্রোধের শিকার হতে হচ্ছে।
দিহান যে তাকে খুব সহজে মেরে ফেলবে তা নয়
বরংচো অনেক যন্ত্রণাকর শাস্তি দিয়েই মেরে
ফেলবে কারণ মারার হলে প্রথমেই মেরে ফেলতো।
তাছাড়া তাকে মারার জন্য ছুড়ি বা চাকু
ব্যবহার করলেই পারতো
কিন্তু সে তা ব্যবহার না করে অন্য কিছু করছে।
দিহান ব্যাগ থেকে আরো প্রয়োজনীয়
এবং শাস্তির জন্য ভয়ংকর জিনিস
বের করতে লাগলো।
যা কোনো স্বাভাবিক মানুষ স্বাভাবিক অবস্থায় দেখলেই
ভয় পাবে। রিমির মনের উপর দিয়ে যে কি যাচ্ছে তা
সে কিছুতেই বুঝাতে পারছে না।
মুখটাও অনেক শক্ত করে বাঁধা,
দিহানকে যে কিছু প্রশ্ন করবে তারও কোনো উপায় নেই।
আর প্রশ্ন করেই বা কি লাভ? আজ তার সামনে
যে মানুষটি রয়েছে সেতো তার ভালোবাসার দিহান নয়।
সে অন্য কেউ। কারণ তার ভালোবাসার
দিহান কখনোই এমন হতে পারে না। কখনোই না।
......
...
রিমির সাথে দিহানের পরিচয় একটা
......
...
রিমির সাথে দিহানের পরিচয় একটা
বিয়ে বাড়ীর অনুষ্ঠানে।
দিহান অনেকটা ভদ্র,চুপচাপ এবং কর্মঠ ছেলে।
সব সময় কাজের মাঝেই নিজেকে
ব্যস্ত রাখতে পছন্দ করে সে।
যখনই সুযোগ পায় তখনই একে-অন্যের কাজ
নিজের দায়িত্বে নিয়ে নেয়। তাইতো বিয়ের অনুষ্ঠানে
এসেও খাবার পরিবশনের দায়িত্ব সে নিয়েছে।
যদিও বিয়েটা তার এক রিলেটিভের ছিলো
তার পরেও নিজের ইচ্ছা থেকেই
খাবার পরিবেশনের দায়িত্বটা
সে নিয়েছে। অন্যসব কাজের চেয়ে অন্যকে খাওয়াতে
সে একটু বেশীই পছন্দ করে।
তাই তো সুযোগ পাওয়া মাত্রই লুফে নেয় সে।
পরিবারের সদস্যরাও তার এমন
মনোমানষিকতায় অনেক খুশি।
কারণ আজকাল ইয়াং ছেলে
মেয়েদের যা অবস্থা খাবার
পরিবেশন তো দূরের কথা বড়দের সাথে ঠিক ভাবে
কথাই বলতে চায় না। আর সেখানে দিহান
এমন আন্তরিকতার সহিত কাজ করে এতে সবার
খুশি হওয়ারই কথা। দিহান তরকারি দিতে ধরেই
হঠাৎ পিছনের একজনের ধাক্কায় অল্প একটু তরকারি
পাশের একজনের শরীরে যেয়ে পড়ে।
আর সাথে সাথেই সে প্রচন্ড জোড়ে চিৎকার করে উঠে।
দিহানের যতদূর মনে পড়ে তরকারীটা
তেমন গরম ছিলো না,
তাহলে এত জোড়ে চিৎকার দেয়ার কারণ কি?
একটু ভালো করে লক্ষ্য করতেই দেখতে পেলো
একটা অতিব সুন্দরী রমনী চশমার গ্লাসের পিছনের
চোঁখ দুটা ইয়া বড় করে রাগে দাঁত কটমট করছে।
দিহান তার দৃষ্টি সেই রমনীর চোঁখ থেকে নামিয়ে
বুকের দিকে নিয়ে গেলো। দিহান সাধারণত
মেয়েদের সাথে কথা বললে তাদের
চোঁখের দিকে তাকিয়েই
কথা বলে। কিন্তু এখন বাধ্য হয়েই তার
বুকের দিকে তাকাতে
হচ্ছে। বুকে তাকাতেই বিশাল জোড়ে শকড্
খেলো সে কারণ
ধবধবে সাদা ড্রেসের ঠিক বুকের বাঁ পাশে তরকারীর
বিশাল দাগ লেগে আছে। সম্পূর্ণ সাদা ড্রেসে শুধু বুকের
এক পাশে লাল দাগ দেখতে একটু বাজেই লাগছে।
তারপর জামাটা দেখেও অনেক দামী মনে হচ্ছে।
মনে হয় এই বিয়ে উপলক্ষ্যেই কেনা হয়েছে।
দিহানের ঠিক এই মুহূর্তে কি বলা উচিৎ বা কি করা
উচিৎ ঠিক বুঝে উঠতে পারছে। তার শুধু
মনে হচ্ছে মেয়েটি
বেশী চিৎকার চেঁচামিচি করার আগেই পবিবেশটা
শান্ত করতে
হবে। তাই সবার আগে তার প্লেটেই তরকারী দেয়া
শুরু করলো।
ওই যে কথায় আছে না পেট শান্তি তো দুনিয়া শান্তি।
কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, রিমির
বুকের যে অংশটা
বাকী ছিলো দ্বিতীয় বার তরকারি দিতে ধরে ঠিক
সেই জায়গা
টুকুও মেখে গেলো। রিমি মুখ খুলে চিৎকার
দেবার আগেই কিন্তু,
দিহান তরকারি রেখে সেখান থেকে এক দৌঁড়ে
পালিয়ে যায়।
.
তারপর থেকে বিয়ে বাড়ীতে যতটা সময় দিহান
.
তারপর থেকে বিয়ে বাড়ীতে যতটা সময় দিহান
ছিলো ততোটা
সময় পালিয়ে পালিয়েই থাকার চেষ্টা করেছে।
কারণ যার কাপড়ে দাগ ভরেছে সে দিহানকে
খুঁজে বেড়াচ্ছে।
পালিয়ে বেড়াতে বেড়াতেই হঠাৎ তার সামনে পড়ে যায়।
দিহান বিড় বিড় করে বলতে থাকে লে হালুয়া,
যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যা হয়।
দিহান যখন মেয়েটার
উদ্দেশ্যে বলতে লাগলো এই যে মিস অপরুপা।
ঠিক তখনই
ওপাশ থেকে উত্তর আসলো রিমি। দিহান যখন বললো,
জ্বি!
মেয়েটি বললো আমার একটা নাম আছে,
আর সেই নামটাই
বলেছি রিমি। নীল মুচকী হেসে বলে অহ আচ্ছা
মিস রিমি
ড্রেসে দাগ লেগে আপনাকে কিন্তু ততোটাও
খারাপ লাগছে না।
রিমি অগ্নিমূর্তি চোখেই বলতে থাকে আপনার
তো সাহস কম
না কই আপনি সরি বলবেন উল্টা আমার
সাথে ফ্ল্যাট করছেন?
দিহান তার হাসির মাত্রাটা আরো একটু
বাড়ীয়ে দিয়ে বলে
সুন্দরকে যদি সুন্দর বলা অপরাধ হয়ে থাকে
তাহলে আমি
অবশ্যই সাহসী। আর তাছাড়া আপনার যে দৌন্দর্য তা
কখনোই সামান্য একটা ড্রেসের উপর নির্ভর না।
বরংচো আপনি যে ড্রেস পড়বেন সেই ড্রেসটাই সৌন্দর্যে
ভরে উঠবে। দিহানের কথায় রাগ ঝেড়ে
ফেলে রিমি একেবারেই
হেসে উঠে। দিহান মনে মনে বলতে লাগে যাক
রাগটা মনে হয়
কিছুটা কমেছে। আর কমবেই না কেনো
মেয়েদের সবচেয়ে
দুর্বলতা গুলার অন্যতম হলো নিজেদের প্রশাংসা শুনে
সবকিছু ভুলে যাওয়া। দিহান ঠিক সেই জায়গাতেই তীর
মেরেছে,ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে।
রিমির রাগ তো কমেছে
কমেছে সাথে দিহানের সাথে বন্ধুত্বও গড়ে উঠেছে।
সময়ের সাথে সাথে তাদের বন্ধুত্ব আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠে।
কোনো এক মহাপুরুষ বলেছিলো দুটা সমবয়সের ছেলে
কখনোই বন্ধু হতে পারে না,তারা এক সময়
না এক সময় একে-
অন্যের প্রেমে পড়বেই। তাদের ক্ষেত্রেও
এটার কোনো ব্যতিক্রম
ঘটেনি। ফলে একে অন্যের প্রেমের বন্ধনে
তারাও আবদ্ধ হয়ে
যায়।
.
খুব সুন্দর ভাবেই কাটতে লাগলো তাদের দিনগুলি।
.
খুব সুন্দর ভাবেই কাটতে লাগলো তাদের দিনগুলি।
আর চার পাঁচটা রিলেশনশিপ যেমন হয় তাদেরটাও ঠিক
তেমনি ছিলো। দুই জনই দুই জনের সব
সময় খেয়াল রাখতো।
এক মুহূর্তও তারা তাদেরকে কাছ ছাড়া করতে চাইতো না।
সারাদিন এক সঙ্গে থেকে একে অন্যের কাধে মাথা রেখে
টুপুর টুপুর গল্প করতেই তারা অনাবিল সুখ খুঁজে পেতো।
দিহান যেমন চুপচাপ,শান্ত ছিলো রিমি ঠিক
তার উল্টা ছিলো।
অত্যন্ত চঞ্চল,বাচাল, দুষ্টু এবং ফ্রেন্ডলি ছিলো।
দিহানও মিশুক
ছিলো তবে যাদের সাথে ওর খুব ভাল সম্পর্ক
তাদের সাথেই
বেশী মেলামেশা করতো কিন্তু রিমি পরিচিত
অপরিচিত সকলের
সাথেই একই ধরনের আচারণ করতো।
যা দিহানের মোটেই
পছন্দের ছিলো না। রিমি অত্যন্ত ফ্রেন্ডলি
স্বভাবের হওয়ায়
রিমির ফ্রেন্ড সংখ্যাও অনেক বেশী ছিলো। তাই যখনই
সময় পেতো তখনই সে তার বন্ধুদের সাথে
সময় পার করতো।
যা দিহানের দুঃশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
দিহান রিমিকে
সরাসরিই মানা করে দেয় যাতে সে আর তার
বন্ধুদের সাথে না
মিশে। রিমি হয়তো প্রথমে ভেবেছিলো দিহান
তার সাথে মজা
করছে কিন্তু যখন বুঝতে পারলো দিহান সিয়িয়াস
তখন রিমি
তার বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ কমে দেয়।
সময় যত গড়াতে
থাকে রিমি ততো বুঝতে পারে দিহানের হয়তো
কোনো সমস্যা
আছে। কারণ দিহান তার সাথে অতি ক্ষুদ্র
জিনিস নিয়েও
রাগারাগি করতে থাকে। অতি সামান্য
জিনিস নিয়েই ভুল
বুঝতে থাকে রিমিকে। আর কোনো ছেলে বন্ধুর
সাথে কথা বলা
তো দূরে থাক শুধুমাত্র তার দিকে তাকিয়ে হাসি দিলেই
সে তার সাথে খারাপ আচারণ শুরু করে দেয়। রিমি এক
সময় আবিষ্কার করেই ফেলে দিহান কিছুটা
সাইকো টাইপের।
কিন্তু রিমি যে দিহানকে ভালোবেসে ফেলেছে
তার যে আর
কিছুই করার নেই। হাজার হলেও দিহানকে
নিয়েই থাকতে হবে।
এক সময় দিহান নিজে থেকেই স্বীকার করে
নেয় তার সমস্যার
কথা। সে অন্য ছেলেদের সাথে রিমির মেলামেশা
কিছুতেই
সহ্য করতে পারে না। যখনই রিমিকে অন্য
কোনো ছেলের সাথে
গল্প গুজব অথবা হাসি তামাশা করতে দেখে তখনই তার
মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এর অবশ্য
কারণটাও বলে
দেয় দিহান। রিমির আগে তার আর একটা মেয়ের সাথে
রিলেশন ছিলো। যেহেতু ওটা দিহানের ফার্স্ট লাভ ছিলো
যার ফলে মেয়েটিকে দিহান মন প্রাণ দিয়েই
ভালোবেসেছিলো।
ভালোবাসাটা এতই তীব্র ছিলো যে সে অন্য কারো সাথে
কথা বললেই তার জেলাস ফিল হতো। সে মেয়েটিকেও
অন্য ছেলেদের সাথে মিশতে মানা করেছিলো
কিন্তু মেয়েটি
উল্টা থাকে ধোকা দিয়ে অন্য ছেলের সাথে
শারীরিক সম্পর্কে
লিপ্ত ছিলো। মেয়েটির ধোকা দিহানকে
এতোটাই শকড্ করে
যে আস্তে আস্তে সাইকোতে পরিনত হয়।
তবে এটা সব সময়ের
জন্য নয় শুধুমাত্র যখন তার প্রিয়মানুষ গুলা
ধোকা দেয় ঠিক
তখনি। রিমি দিহানকে আশ্বস্ত করে যে সে তার বিশ্বাসের
মর্যাদা রাখবে। হঠাৎ একদিন ভার্সিটির কিছু গুরুত্বপূর্ণ
নোটের দরকার পড়ে রিমির। কারো কাছে যখন পায়না
তখন শেষ ভরসা হয়ে দাঁড়ায় ছেলে বন্ধু গুলা। তাদের
একজনকে ফোন দিতেই সে জানিয়ে দেয়
তার কাছে আছে।
রিমির বাসার ওইদিকে নাকি তার একটা কাজ আছে,
তাই তাদের বাসার পাশের কফি শোফে সে
রিমিকে ডাকে।
রিমি ঠিক যখন নোট নেওয়ার জন্য কফি
শোফে ঢোকে ঠিক
তখনি দিহান রিমিকে দেখে ফেলে। ছেলেটির সাথে রিমির
হেসে হেসে কথা বলাটা সহ্য করতে না পেরে সোজা কফি
শোফে যেয়ে ছেলেটিকে মারধর শুরু করে দেয় দিহান।
দিহানের আচারণে রিমি এতোটাই অপমানবোধ
করে তারপর,
যে শেষ পর্যন্ত দিহানের সাথে সব ধরনের
সম্পর্ক সে শেষ করে
দেয়।
......
...
রিমির চোঁখ দিয়ে অনাবরত পানি পড়ছেই।
......
...
রিমির চোঁখ দিয়ে অনাবরত পানি পড়ছেই।
দিহানের অবশ্য এতে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।
সে তার কাজ গুলাই মনোযোগ দিয়ে করছে।
কিছু রাসায়নিক জিনিসের মিশ্রণ ঘটাচ্ছে,আবার
কখনো বিষধর কিছু বের করছে আবার কখনো তীব্র
যন্ত্রণাদায়ক যন্ত্রপাতি বের করছে।
সেগুলা অল্প অল্প করে
রিমির শরীরে প্রযোগ করেও দেখছে সেগুলা
কাজ করে কিনা।
এই সামান্য পরীক্ষা গুলাতেই যেন রিমির যন্ত্রণা
তীব্র থেকে
তীব্রতর হয়েছে। শরীরের প্রতিটি কোষ যেন আস্তে আস্তে
মরে হচ্ছে। রিমির এখন মনে হচ্ছে বাঁচার
চেয়ে মরে যাওয়াই
বোধয় বেশী শান্তির হবে।
ভালোবাসার মানুষটির হাতে এমন
কষ্ট পাওয়ার চেয়ে একেবারে মরে যাওয়াই ভালো।
মরে গেলে অন্তত অভিমান গুলা আর কাজ করবে না,
এটাই ভালো। রিমি মনে মনে বলতে লাগলো হাহাহা আমি
কত বোকা!যার কাছে আমার চোঁখের পানিরই
কোনো দাম
নেই তার কাছে আবার আমার অভিমান।
এ তো এখন আকাশ
কুসুম স্বপ্ন দেখা।
.
দিহান রিমির অবস্থা বুঝতে পেরে তার মুখের
.
দিহান রিমির অবস্থা বুঝতে পেরে তার মুখের
বাঁধন খুলে দিলো।
বাঁধন খুলে দেয়ার সাথে সাথেই রিমি জোড়ে জোড়ে শ্বাস
নিতে লাগলো। এতক্ষণ যেন তার দম বন্ধ হয়ে আচ্ছিলো।
মুখের বাঁধন খুলে দেয়ায় সে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচল ।
তারপর নিজেকে কিছু সময় ধরে শান্ত করে নিলো।
শান্ত হওয়ার পর রিমি দিহানের দিকে
তাকিয়ে বলতে লাগলো
কেনো দিহান কেনো? আজকে আমার সাথে কেনোই বা
এমন করছো? তোমাকে ভালোবাসাটাই কি
আমার ভুল ছিলো?
তবে ভালোবেসে তোমাকে বিশ্বাস করাটাই কি
আমার ভুল ছিলো?
কিন্তু, কেন আজকে তোমার এমন সাইকো
ক্রোধের শিকার
আমাকে হতে হচ্ছে? দেখো,
তোমার জন্য আমি কত কিছুই না
করেছি, কিন্তু, আজকে তার প্রতিদান তুমি
আমাকে এইভাবে
দিচ্ছো? ছিঃ দিহান ছিঃ, ধিক্কার জানাই তোমার এমন
ভালোবাসাকে। ধিক্কার জানাই তোমার এমন নোংরা
মনমানষিকতাকে। তোমার সামনে এইভাবে বসে থাকার
চেয়ে মরে যাওয়াই অনেক ভালো। মেরে ফেলো আমাকে,
এক্ষণি মেরে ফেলো,অপেক্ষা করছো কিসের???
.
রিমির কথা শেষ হতে না হতেই দিহান বলে
.
রিমির কথা শেষ হতে না হতেই দিহান বলে
উঠলো মরবি তো
তুই নিশ্চয়। এতো তাড়া কিসের, সবুর কর
এতো তাড়াতাড়ি
তোকে মেরে ফেললে তো সবই শেষ।
তোকে তো আমি মারবো
তীলে তীলে যন্ত্রণা দিয়ে।
যখন তুই আমার কাছে মৃত্যুর জন্য কান্না
কাটি করবি সেই অবস্থাটা দেখার জন্য আমি অপেক্ষা
করছি।
অপেক্ষা করছি তো তোর করুন পরিনতি
নিজের চোঁখে দেখার
জন্য। বলেই হেসে উঠলো দিহান।
দিহানের কথা শুনে রিমি বলতে
লাগলো এত ক্ষোভ কিসের জন্য আমার প্রতি,
হ্যাঁ? কিন্তু কেন
আমার ভালোবাসার কি কোনোই দাম নেই তোমার কাছে?
তোর ভালোবাসা!!! হাহাহা সে তো সর্বনাশীর
চেয়ে কম নয়
বলেই দিহান তার প্যান্টের পকেট থেকে
একটা ওষুদের পাতা
তার সামনে রাখলো। ওষুদের পাতাটা দেখেই
চমকে উঠলো
রিমি। সে মনে মনে বলতে লাগলো এটা দিহান
কিভাবে পেলো?
তাহলে আমার প্রতি তোমার ক্ষোভের একমাত্র
কারণই হলো এটা!!
ওষুদের পাতাটা দেখে রিমি মুখের সব ভাষাই
যেন হারিয়ে
ফেলেছে। তার শুধু মনে হতে লাগলো
দিহানের হাত থেকে বাঁচার
আর কোনো পথই খোলা থাকলো না তার সামনে।
Post a Comment